আজ শনিবার, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নিখোঁজ শিশু সাদমানকে উদ্ধারের দাবীতে মানববন্ধন

নিখোঁজ শিশু

নিখোঁজ শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর এলাকার দেওভোগ থেকে গত সাড়ে দশ মাস যাবত নিখোঁজ দেড় বছরের শিশু সাদমান সাকিকে উদ্ধারের দাবীতে মানবন্ধন করেছে শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী। সোমবার বেলা এগারোটায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তাদের অভিযোগ, পুলিশ অপহরণকারীদের শনাক্ত করলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধের সরকার ক্ষমতায় থাকতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান নিখোঁজের ব্যাপারে প্রশাসন কোন ধরনের সহযোগিতা করছে না। যার কারনে নিখোঁজ সাদমান সাকির সন্ধান দিতে প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বক্তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন। তারা দ্রুত নিখোঁজ সাদমান সাকিকে উদ্ধারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, নিখোঁজ সাদমান সাকি র বাবা সৈয়দ ওমর খালেদ এপন, মা হাবিবা খালেদ লিপি সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
রফিউর রাব্বি বলেন, একটি দেড় বছরের শিশু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে পারে না। এটা দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ব্যাপার। সাদমান সাকিকে অপহরণকারী অপরাধীরা চিহ্নিত হওয়ার পরেও তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে ত্বকী হত্যাকান্ড ছাড়া কোন হত্যাকান্ডের অপরাধীরা শনাক্ত হয়নি। এর পেছনে রাজনীতি রয়েছে। প্রশাসন সেই রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে অপরাধীদের পেছনে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে আড়াল করছে। তিনি সাদমান সাকিকে দ্রুত উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান।

গত ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর দুপুরে শহরের দেওভোগ কাঠের দোতলা এলাকায় নিজ বাড়ির গেটের সামনে থেকে নিঁখাজ হয় দেড় বছরের শিশু সাদমান সাকি। ঘটনার দিন রাতে সদর মডেল থানায় প্রথমে জিডি ও একদিন পর ৩ ডিসেম্বর এ ব্যাপারে অপহরণ মামলা করেন নিখোঁজ সাদমানের বাবা সৈয়দ ওমর খালেদ এপন। ঘটনার ৩ মাস পর মামলাটি তদন্তের ভার দেয়া হয় পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন)। তদন্তকালীন সময়ে তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপারসহ পুলিশ বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারা সাদমান সাকি জীবিত আছে বলে দাবী করে উদ্ধারের আশ্বাস দিলেও সাড়ে দশ মাসেও তারা শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারেনি।

পরিবারের স্বজনদের অভিযোগ, তদন্ত চলাকালীন সময়ে পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা সাদমান সাকি জীবিত আছে এবং কারা অপরহরণ করেছে তাদেরকেও শনাক্ত করা হয়েছে বলে তাদেরকে জানান। পুলিশ সুপারের নিদের্শ পেলেই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে রহস্যজনক কারনে গত আগস্ট মাসে কাউকে না জানিয়ে পিবিআই মামলার তদন্ত অসম্পূর্ণ রেখেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদমান সাকি অপহরণ হয়েছে সত্য। তবে অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলার বাদি ও নিখোঁজ সাদমানের বাবা পুলিশের এ প্রতিবেদন মেনে না নিয়ে আদালতে না রাজি দিলে আদালত আগামী ১৮ অক্টোবর শুনানির তারিখ ধার্য্য করেছেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ